ঘরে বসে কবর জিয়ারত করার নিয়ম - দূর থেকে কবর জিয়ারতের নিয়ম
ঘরে বসে কবর জিয়ারত করার নিয়ম - দূর থেকে কবর জিয়ারতের নিয়ম এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পারেন এছাড়া আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব ঘরে বসে কবর জিয়ারত করার নিয়ম - দূর থেকে কবর জিয়ারতের নিয়ম আজকের এই আর্টিকেলটি আপনি যদি মনোযোগ সহকারে পড়েন ঘরে বসে কবর জিয়ারত করার নিয়ম - দূর থেকে কবর জিয়ারতের নিয়ম শুধুমাত্র একটি পোস্ট থেকে জেনে নিতে পারবেন ।
ঘরে বসে কবর জিয়ারত করার নিয়ম - দূর থেকে কবর জিয়ারতের নিয়ম
এই আর্টিকেলটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে ঘরে বসে কবর জিয়ারত করার নিয়ম - দূর থেকে কবর জিয়ারতের নিয়ম সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আর কোন প্রশ্ন থাকবে না ।
কবর জিয়ারতের দোয়া নিয়ম
কবর জিয়ারতের দোয়াটি হল
* আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম, আনতুম সালাফুনা ওয়া নাহনু বিল আছার।
এর অর্থ হল : হে কবর বাসি তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ আমাদের এবং তোমাদের সবাইকে ক্ষমা করুক। আমাদের আগে তোমরা কবরে গেছো এবং আমরা পরে আসছি।
* আসসালামু আলাইকুম দার কাওমিম মুউমিনি না ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লাহিকুনা।
এর অর্থ হল :মমিন কবরবাসীদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। ইনশাআল্লাহ আমরাও আপনাদের সঙ্গে মিলিত হব।
কবর জিয়ারতের নিয়ম হলো :
*কবরস্থানের যেয়ে সর্বপ্রথম কবর জিয়ারতের দোয়া পড়া।
*এরপর কবর বাসীদের জন্য সওয়াবের নিয়তে দরুদ শরীফ ও বিভিন্ন সুরা আদায় করা।
*মৃতদের জন্য বা কবরবাসীর মাগফিরাতের জন্য দোয়া করা।
কবর জিয়ারত করার ফলে নানারকম ফজিলত রয়েছে। কিছু সূরার বেশি ফজিলত রয়েছে যেমন দরুদ শরীফ, সূরা ফাতিহা, সূরা ইখলাস, আয়াতুল কুরসী ইত্যাদি।
কবর জিয়ারত করার সঠিক পদ্ধতি
কবর জিয়ারত করা, কবরের পাশে গিয়ে দোয়া করা, কবরস্থ ব্যক্তিদের জন্য দোয়া করা এবং নিজের জন্য দোয়া করা উত্তম। তাই বলা হয় কবর জিয়ারত সঠিক নিয়মে করা উচিত। কবর জিয়ারতের কিছু পদ্ধতি রয়েছে তা নিচে দেওয়া হল :
*কবরে যখন আপনি প্রবেশ করবেন তখন মৃত ব্যক্তিদের জন্য সালাম ও দোয়া করা সুন্নত বলে জানা যায়। তাই রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম সাহাবীদের দোয়া ও সালাম দেওয়ার পদ্ধতি শিখিয়েছেন। আসসালামু আলাইকুম আহলাদ দিয়া -রি মিনাল মু'মিনীন,অইননা ইনশাআল্লা-হু বিকুম লালা- হিন, আসআলুল্লা-হা লানা আলাকুমুল আ- ফিয়াহ।
এই দোয়ার অর্থ হলো : হে কবরবাসী মুমিনগণ তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ চাইলে আমরাও তোমাদের শহীত মিলিত হবো। আমি আমাদের ও তোমাদের সবার জন্য নিরাপত্তা কামনা করছি।
*কবরের উপর কখনোই চলা ও দোলা বৈধ নয়। তোমরা কবরের দিকে কখনোই মুখ করে নামাজ পড়ো না বা বসনা।
*কবরবাসীর নৈকট্য লাভের জন্য কখনোই তাওয়াফ করা যাবেনা। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তারা যেন প্রাচীন গৃহে তাওয়াফ করে। অর্থাৎ এখানে বলা হয়েছে কেবলি কাবারি তাওয়াফ বিধেয়।
*কবরস্থানে কোরআন শরীফ পাঠ করা ঠিক না। মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের গৃহকে কবরস্থান বানিয়েও না। যেহেতু শয়তানেরা সেই গৃহ হতে পলায়ন করে, যে গৃহে সূরা বাকারায় পাঠ করা হয়ে থাকে।
অর্থাৎ এই কথার অর্থ যা বোঝায় তা হল : কবরস্থান হল কোরআন পাঠ করার স্থান নয়। সব সময় পক্ষান্তরের গৃহে কোরআন শরীফ পাঠ করতে হয়। তাই বলা যায় যে কবরস্থানে বা কবরস্থানের আশেপাশে কোরআন পাঠের ব্যাপারে বর্ণিত হাদিসগুলো সহিত হয়নি।
*মৃত ব্যক্তিদের নিকট কোনভাবেই মদদ ও সাহায্য ভিক্ষা করা শিরক করা বলা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেছেন
তোমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো আহ্বান করোনা, যারা তোমাদের কোন উপকারও করতে পারে না বা অপকারও করতে পারে না। যদি করে থাকো তাহলে তুমি সীমা লগ্নহীন কারী বা মুশরিকদের শ্রেণীভুক্ত হবে। (সূরা ইউনুস ১০৬ আয়াত)
*কবরের উপর কোন ভাবেই ফুলের তোড়া বা ফুল জাতীয় কোন কিছুই রাখা যাবে না কারণ এতে খ্রিস্টানদের অনুরূপ গ্রহণ করা হয়ে থাকে। এতে করে অযথা টাকার অপচয় হয়ে থাকে। এই অর্থ যদি ওখানে না শেষ করে গরিব-দুঃখীদের উদ্দেশ্যে দান করা হয় তাহলে মৃত ও গরিব ব্যক্তি সবারই উপকার হয়ে থাকে।
*কোন কবরের উপর কোন ভাবে ইমারত গঠন করা যাবে না বা কোরআন হাদিসের কোন আয়াত সেখানে লিখা যাবে না। কোন রকমের কবিতা বা ইমারত তৈরি করা বৈধ নয়। কারণ হাদিসে এ বিষয়ে নিষেধ আজ্ঞা বলা হয়েছে।
আপনি যদি কবর চিনে রাখতে চান সেক্ষেত্রে আপনি উঁচু পাত্থর চিহ্ন হিসেবে রাখায় যথেষ্ট। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম উসমান বিন মামুনের কবর চিনে রাখার জন্য কবরের উপর একটি পাথর রেখেছিলেন। (তিনি বলেছিলেন আমার ভাইয়ের কবরের উপর একটি পাথর রেখেছি)
ঘরে বসে কবর জিয়ারত করার নিয়ম
কবর জিয়ারত যেখান সেখান থেকেও করা যায়। আপনি যদি কোন কারণে কবর জিয়ারত করার জন্য কবরস্থানে না যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনি ঘরে বসে বা জে স্থানে আছেন সেখান থেকেও খবর জিয়ারত করতে পারবেন। কবর জিয়ারত করার জন্য দরুদ শরীফ, সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী, সূরা ইখলাস ও, যেসব সূরা আপনার সহজ মনে হবে সেগুলো পড়ে মৃত ব্যক্তির জন্য আপনি সোওয়াব পাঠিয়ে দিতে পারবেন। আপনি যদি চান দু হাত না তুলে ও মনে মনে দোয়া করতে পারবেন কবরবাসীদের জন্য।
নিচে কিছু নিয়ম লিখা হলো ঘরে বসে কবর জিয়ারত করার পদ্ধতি যা করলে আপনার সুন্নাহ পালন হবে
* ঘরে বসেই আপনি মৃত ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে তার জন্য দোয়া করতে পারবেন।
*আপনি তার ভালো গুনাগুন গুলো স্মরণ করুন এবং তার জন্য প্রার্থনা করুন।
*আল্লাহর কাছে আপনি প্রার্থনা করুন যে তিনি তাকে জানাতে প্রবেশ করান এবং তার জাহান্নামের আগুন থেকে তাকে রক্ষা করুন।
* মৃত ব্যক্তির জন্য নেক আমল করুন সব সময় ঘরে বসে থেকে তার জন্য দোয়া করুন।
মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করার তার জন্য আমল করা এটা একটি নেক আমল ও সুন্দর কাজ। এভাবেই আপনি ঘরে বসে মৃত ব্যক্তির জন্য কবর জিয়ারত ও তার জন্য দোয়া সাদকা ইত্যাদি সবকিছুই করতে পারবেন।
কবর জিয়ারত করার দোয়া
মহান আল্লাহ তা'আলা বলেছেন প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। তোমাদেরকে আমার সামনেই প্রত্যাবতী তো হতে হবে।
আমরা মুসলমান তাই আমাদের উচিত আমাদের আত্মীয়-স্বজন ও কাছের মানুষদের গত হওয়া আপনজনদের কবর জিয়ারত করা। কবর জিয়ারত করলে সোয়াব পাওয়া যায়। কবর জিয়ারতের মাধ্যমে আমরা আমাদের মৃত্যুর কথা স্মরণ করতে পারি। কবর জিয়ারতের মাধ্যমে আমাদের হৃদয় বিগলিত হয়। চোখের কনে জমে হৃদয়ের বিগলিত সব চোখের জল। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন যে
কবর জিয়ারত করলে দুনিয়া বিমুখতা এনে দেয় এবং আখিরাতের কথা সব সময় স্মরণ করে দেয়। (ইবনে মাজাহ হাদিস ১৫৭১)
কবর জিয়ারতের দোয়াটি হল :
আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল ক্বুবূরি ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাইকুম, আন তুম সালাফুনা ওয়া নাহনু বিল আসরা। এর অর্থ হল হে কবরবাসী গান আমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।
কবর জিয়ারতের উপকারিতা
যারা কবর জিয়ারত করে তাদের অনেক উপকারিতা আছে ও সোয়াব হয়ে থাকে জিয়ারতকারীদের। কবর জিয়ারতের মাধ্যমে জীবিত আত্মীয় স্বজনদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। ব্যক্তিদের পরকাল নিয়ে চিন্তা ভাবনা মনের মধ্যে আসে। কবরবাসীদের হক আদায় করা যায়। এগুলোই হলো কবর জিয়ারতের অন্যতম উপকারিতা।
দূর থেকে কবর জিয়ারতের নিয়ম
দেখা যায় যে অনেক সময় আত্মীয়-স্বজনদের কবর জিয়ারত করা বা মা বাবার কবর জিয়ারত করা যায় না দূরে থাকার জন্য। তাই বলা হয়েছে যে আপনি দুনিয়ার যেখানেই থাকেন না কেন কবর বাসীদের জন্য দোয়া করতে পারবেন সেখান থেকেই। কবর জিয়ারতের মূল উদ্দেশ্য হলো কবরবাসীদের জন্য দোয়া করা। তাই বলা হয়েছে এই দোয়াটি আপনি যে কোন জায়গা থেকেই করতে পারবেন। আপনি যখন মৃত আত্মীয়র কবরের কাছে গিয়ে দোয়া করবেন তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর কবর জিয়ারতের সুন্নাহ অনুযায়ী কবরবাসীদের কে সালাম দিয়ে তাদের জন্য দোয়া করতে শুরু করবেন। তবে নারীদের জন্য কবর জিয়ারতের কথা বলা হয়নি শুধু পুরুষদের জন্য কবর জিয়ারত করার কথা বলা হয়েছে।
পিতা মাতার কবর জিয়ারতের দোয়া
পিতা-মাতা হলো সন্তানের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাদের স্নেহ মমতা ভালবাসার কোন তুলনা হয় না। তাই বলা হয় পিতা মাতার অভাব কোন কিছু দিয়েই পূরণ করা যাবে না। তাই তাদের জন্য আল্লাহতালার কাছে সবসময় দোয়া করার কোন বিকল্প নেই। মহান আল্লাহ তা'আলা সব সময় পিতা-মাতার জন্য দোয়া ও উত্তম আচরণ করা নির্দেশনা দিয়েছেন।
কোরআনে বর্ণিত রয়েছে পিতা মাতার জন্য সন্তানের যে দোয়া সেটা হলো
রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগিরা। এর অর্থ হল :হে আমাদের পালনকর্তা তাদের উভয়ের প্রতি আপনি রহমত করুন, যেমনি ভাবে তারা আমাদের শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন । (সূরা বনি ইসরাইল ২৪)
কবরের পাশে গিয়ে মা-বাবার জন্য দোয়া পড়া। মা-বাবার মুক্তির জন্য দোয়া করাই জিয়ারতের প্রথম উদ্দেশ্য। এখানে নিজের জন্য দোয়া করা ও উত্তম। আপনি যখন জিয়ারত করা শুরু করবেন তখন প্রথমেই এই বলে শুরু করবেন যে
আসসালামু আলাইকুম কাওমিম মুমিনিনা ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লাহিকুন।
এরপর দরুদ শরীফ পড়বেন, সূরা ফাতিহা, ইখলাস ও আয়তুল কুরসি পড়তে হবে। এরপর বাবা মার মৃত্যুর মাগফিরাত ও ক্ষমা প্রার্থনা করে মোনাজাত করতে হবে।
পিতা মাতা মারা যাওয়ার পর আমাদের সন্তানদের আরো কিছু করণীয় রয়েছে সেগুলো হলো :
দান -সাদকাহ করা, নফল রোজা রাখা তাদের প্রতি সোয়াব পৌঁছানোর জন্য তাদের উদ্দেশ্যে হজ, ওমরা কুরবানী করা ।তাদের সম্মান সব সময় বজায় রাখা, তাদের ওসিয়ত গুলো পূরণ করা। তাদের বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। তাদের যদি ঋণ থাকে ঋণ পরিশোধ করা, কাফফারা আদায় করা, তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা, তাদের কবর জিয়ারত করা ও তারা যদি কোন গুনাহের কাজ করে যায় সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া।
কবর জিয়ারতের হাদিস
রাসূল সাল্লাল্লাহু কবর জিয়ারতের হাদিস সম্পর্কে যা বলেছেন তা হল
জিয়ারত শব্দের অর্থ হলো :দেখা করা, সাক্ষাৎ করা ইত্যাদি। জীবিত মানুষদের আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি ভালোবাসা সম্মান জিয়ারত করা সাক্ষাৎ করা একটি হাদিস বলে বলা হয়েছে। এটি একটি নেক কাজ বলে জানা যায়। বিভিন্ন হাদিসে বলা হয়েছে যে জিয়ারত করা অর্থাৎ সাক্ষাৎ করা মিলিত হওয়া একটি মুস্তাহাব এবাদত। রাসুলুল্লাহ আরো বলেছেন যে কবর শরীফ জিয়ারত করা নূন্যতম শ্রেষ্ঠ জিয়ারত।
পবিত্র কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দরুদ সালাম প্রদানের মর্যাদা হাদিসে বর্ণিত আছে। এভাবে আমরা জানতে পারি যে কবর শরীফ জিয়ারত করার গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত।
তবে এ এবার তাদের জন্য আরও বিশেষ কোন হাদিস আছে কিনা তা আমার জানা নেই। কেউ কেউ আবার নানারকম জাল ভিত্তিক হাদিস বের করে থাকে সেগুলোতে কান দেওয়া উচিত না।
শেষকথা:ঘরে বসে কবর জিয়ারত করার নিয়ম - দূর থেকে কবর জিয়ারতের নিয়ম
পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা ঘরে বসে কবর জিয়ারত করার নিয়ম - দূর থেকে কবর জিয়ারতের নিয়ম জানতে পারলেন । মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি আপনার কোন সমস্যা হওয়ার কথা না ঘরে বসে কবর জিয়ারত করার নিয়ম - দূর থেকে কবর জিয়ারতের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারলেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url